সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ , ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মাছ বাজারে প্রতারণার ফাঁদে ক্রেতারা বালুপাথর মহালের ইজারা বন্ধ নয়, ইজারা প্রথার বাতিল চাই ১১ মাসে অর্ধ শত কোটি টাকার বালু লুট জগন্নাথপুরে ৩ আসামি গ্রেফতার টাঙ্গুয়ার হাওরে গাঁজা সেবন ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, ৫ পর্যটককে কারাদন্ড মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালিত “মধ্যনগরে রাজহংস হাউজ বোট বিএনপি নেতার দখলে” শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ কাদাজলে নষ্ট ভাটির বন্দরের সুনাম সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার চোরাকারবারিদের কোনো ছাড় নয় : বিজিবি অধিনায়ক টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র : অবহেলায় ধ্বংসের পথে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আদারবাজারে সুপেয় পানি ও শৌচাগার সংকট ‘৩১ দফা’ বাস্তবায়নে বিএনপি নেতা অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ শান্তিগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা আবারও ছাতক সীমান্তে ২০ জনকে পুশইন পৌর শহরে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের আহ্বান গাঁজার চালানসহ মাদক কারবারি হেলাল আটক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার, বন্দুক, পাইপগান, গুলিসহ গ্রেফতার ৪ শান্তিগঞ্জে সিএনজি ও প্রাইভেট কার সংঘর্ষে আহত ৫

সুরমা গিলছে বসতভিটা-কৃষিজমি আতঙ্কে মাছিমপুর গ্রামের মানুষ

  • আপলোড সময় : ১০-০৫-২০২৫ ০১:৪৫:৪৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৫-২০২৫ ০১:৪৫:৪৮ পূর্বাহ্ন
সুরমা গিলছে বসতভিটা-কৃষিজমি আতঙ্কে মাছিমপুর গ্রামের মানুষ
আশিস রহমান :: পশ্চিম মাছিমপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব মোজাহিদ (৬৮) মিয়া। চোখের সামনেই সুরমা নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখেছেন নিজের বসতভিটা, ফসলি জমি ও গাছপালা। নদী ভাঙনের কবলে পরে পরপর তিনবার বসতঘর স্থানান্তর করতে হয়েছে তাঁকে। সুরমায় পৈতৃক বাড়ি, জমিজমা সবকিছু হারিয়ে এখন মাথাগোঁজার শেষ সম্বল বাড়িটুকু নিয়ে দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে তাঁর। ভয় হয় কখন জানি এই বাড়িকেও গ্রাস করে বসে সুরমার ভাঙন। মোজাহিদ মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের পরিবারের তিন প্রজন্মের জমিজমা, বসতবাড়ি সুরমা নদীতে বিলীন হয়েগেছে। আমাদের আর কোনো জমি নেই। একই গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব দুলাল মিয়া (৭৫)। মুজাহিদ মিয়ার মতো তিনিও তিনবার বসতঘর স্থানান্তর করেছেন নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। দুলাল মিয়া বলেন, নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি জমিজমা হারিয়ে প্রায় দুইশতাধিক পরিবার এখন উদ্বাস্তু। কেউ সরকারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে উঠেছেন, কেউ অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন আবার কেউ এলাকার বাইরে থিতু হয়েছেন। শুধু মোজাহিদ এবং দুলাল মিয়াই নয়, সুরমার ভাঙনে দোয়ারাবাজার উপজেলার মাছিমপুরের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দারা প্রতিনিয়তই এখন ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতি বছরই গ্রামের অন্তত দুই থেকে পাঁচটি করে পরিবার ঘর স্থানান্তর করছেন নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। ভাঙতে ভাঙতে এখন গ্রামের অর্ধেকই বিলীন হয়েগেছে। স্থানীয়রা জানান, এই ভাঙন সমস্যা নতুন নয়। কয়েক যুগ ধরেই চলছে। তবে এক দশক ধরে ভাঙনের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার যোগাযোগ করেও দায়সারা আশ্বাস ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। ভাঙন প্রতিরোধে এখনই দ্রুত উদ্যোগ না নেওয়া হলে পুরো গ্রামটিই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। উদ্বাস্তু হবে শত শত পরিবার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, দোয়ারাবাজার উপজেলা শাখার আহ্বায়ক ও স্থানীয় বাসিন্দা এসার মিয়া বলেন, বিগত পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দোয়ারাবাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত কোটি টাকার নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। অথচ সবচেয়ে বেশি ভাঙন কবলিত পশ্চিম ও পূর্ব মাছিমপুর গ্রামকে এই প্রকল্পের বাইরে রাখা হয়েছে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে। বর্তমানে ভাঙন প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই। দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজু বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে একাধিক বার লিখিতভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু আমাদেরকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজে আমাদের এলাকাকে বাদ দিয়ে অন্য এলাকায় কাজ করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দোয়ারাবাজার পওর উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অঃ দাঃ) মো. শমশের আলী জানান, সুরমা নদী ভাঙন কবলিত পূর্ব মাছিমপুর ও পশ্চিম মাছিমপুরের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স